রহস্যময় প্রাকৃতিক গুহা আলুটিলা – তারেং – রিছাং ঝর্ণা

Alutila Sajek

আলুটিলা

সাজেক থেকে খাগড়াছড়ি ফিরে এসে ঘুরে দেখতে পারেন রহস্যময় আলুটিলা। খাগড়াছড়ি জেলার মূল শহর হতে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট আলুটিলা বা আরবারী পাহাড়ে আলুটিলা গুহা অবস্থিত।

স্থানীয়দের কাছে যা মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা নামে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় খাদ্যাভাব দেখা দিলে, খাগড়াছড়ির স্থানীয় জনগণ এই পর্বত থেকে বুনো আলু খেয়েই জীবনধারণ করেছিল ।

এরপর থেকেই পর্বতটি আলুটিলা নামে পরিচিতি পায়। প্রায় ২৭০ টি সিড়িঁর ধাপ নীচে নামলে পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। এই গুহাটি খুবই অন্ধকার ও শীতল।

কোন প্রকার সূর্যের আলো প্রবেশ করে না বলে মশাল নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। তবে অতিরিক্ত পর্যটনের চাপে অতিরিক্ত মশালের কারনে আলুটিলা তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হারাতে বসেছে।

তাই আমরা মশালের পরিবর্তে টর্চ/মোবাইলের আলো ব্যবহার করতে পারি। সুড়ঙ্গের তলদেশ পাথুরে ও এর তলদেশে একটি ঝর্ণা প্রবাহমান।

গুহাটি দেখতে অনেকটা ভূ-গর্ভস্থ টানেলের মত যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫০ ফুট। গুহাটির এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ দিয়ে বের হতে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। গুহাটির উচ্চতা মাঝে মাঝে খুব কম হওয়ায় নতজানু হয়ে হেটে যেতে হয়।

 

জেনে রাখা ভাল

  • সাবধানে হাঁটা উচিত কেননা গুহাটির ভিতর সূর্যের আলো না যাওয়ার কারনে অন্ধকার ও চলার পথ উঁচু-নিচু। ভয় নেই, গুহাটি পিচ্ছিল নয়।
  • অনেকে মশাল ব্যবহার করে। দূষনের কারনে আমরা মশাল ব্যবহার করতে নিষেধ করি, তার পরিবর্তে টর্চ কিংবা মোবাইলের আলো ব্যবহার করা যায়।
  • আস্তে আস্তে চারপাশে দেখে হাঁটলে দেখবেন সৃষ্টিকর্তার অপরুপ সৃষ্টি। কোথাও একেবারে শুষ্ক আর কোথাও হতে অনবরত ছুয়ে ছুয়ে পানি পড়ছে।
  • ভেতরে হৈ-হুল্লোড় না করে উপভোগ করুন ও অন্যদের উপভোগ করতে দিন। কেন শুধু শুধু অন্যদের বিরক্তির কারন হবেন
  • প্রবেশের সময় সঙ্গে কিছু রাখবেন না। এতে আপনার চলতে সুবিধা হবে।
  • মোবাইল ও টাকা সাবধানে রাখুন। নিচে পড়ে যাতে ভিজে না যায়।
  • গুহার ভেতর কিছু ফেলা থেকে বিরত থাকুন। এতে এর পরিবেশ নষ্ট হয় এবং অন্যদের চলাচলে অসুবিধা হয়।
  • শীতের সময় পানি কম থাকে বলে, জুতা পায়ে যাওয়া যায়। তবে প্রায় সারা বছরই গুহাতে পানি থাকে বলে জুতার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
  • গুহা থেকে বের হওয়ার পর পাবলিক টয়লেটে পা পরিস্কার করার ব্যবস্থা আছে।
Tareng Hill Sajek

তারেং

ত্রিপুরা ভাষায় ‘তারেং’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘উঁচু পাহাড়’। তারেং পর্যটনকেন্দ্রের উপরে বসে উপভোগ করতে পারেন পাহাড়ের সারী আর শাপের মতো খাগড়াছড়ির বুকে বয়ে চলা চেংগি নদী। র্ষার দিনে ভাগ্য সহায় হলে হারিয়ে যেতে পারবেন মেঘে সমুদ্রে। চোখে পড়বে অসংখ্য জুমখেত, আনারস, কমলা ও সবজির বাগান। অবিরাম ঝিঁঝি পোকার ডাক, নানা জাতের পাখির কলরব আপনাকে নিয়ে যাবে অন্যকোন জগতে। বিকেলটা কাটিয়ে দিতে পারেন অন্যরকম ভাললাগায়।

রিছাং ঝর্ণা

স্হানীয় কাছে ‘তেরাং তৈকালাই’ আর আমাদের কাছে পরিচিত রিছাং নামে। মারমা ভাষায় ‘রি’ শব্দের অর্থ পানি আর ‘ছাং’ শব্দের অর্থ গড়িয়ে পড়া। অবিরত পানি গড়িয়ে পড়ছে বলেই এর নামকরণ করা হয়েছে ‘রিছাং ঝর্ণা’।

খাগড়াছড়ি জেলা সদর হতে প্রায় ১১ কি.মি. আর মাটিরাঙা উপজেলা সদর থেকে ১০কি.মি. দূরত্বে খাগড়াছড়ি-ঢাকা মূল সড়ক ছেড়ে ১ কি.মি. দক্ষিণে চারিদিকের পাহাড়ি প্রকৃতির মাঝে অবস্থান ‘রিছাং ঝর্ণা’র।

মূল সড়ক ছেড়ে দীর্ঘ পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে দীর্ঘ সিঁড়ি। আনুমানিক দুই শতাধিক ধাপ শেষে নিচে নামতে নামতেই আপনার কানে বেজে উঠবে প্রকৃতির ডাক, উপভোগ করতে করতে সিঁড়ির শেষ ধাপ শেষ হতে না হতেই চোখে পড়বে ঝর্ণার।

প্রাকৃতিক অপরুপ রিছাং ঝর্ণার শীতল স্বচ্ছ পানির আওয়াজের পাশাপাশি পাহাড়ি প্রকৃতি বাধ্য করবে বসে উপভোগ করতে। মনকে বাধ্য করতে হবে ফিরে আসতে কোলাহল মূখর কোনো জনারণ্যে ।

কেন আমরা?

অনেক মিলে খুব সহজে হয়তো সাজেক যাওয়া যায়। তবে কোন ট্যুর অপারেটর সাথে গেলে, দায়িত্ব সব তাদের কাঁধে ছেড়ে দিয়ে নিজের মত করে প্রতিক্ষণ উপভোগ করতে পারবেন।

থাকার, খাওয়ার চিন্তাটা তাদের উপর ছেড়ে দিয়ে, আপনজনকে নিয়ে শুধু উপভোগ করতে থাকুন প্রকৃতি। তবে যাওয়ার আগে বিস্তারিত জেনে যাওয়া ভাল।

এক্ষেত্রে যে প্রশ্ন গুলো করতে পারেন।

  • কোন বাসে নিয়ে যাবেন?
  • কোথায় রাখবেন?
  • কি খাওয়াবেন?
  • কি কি দেখাবেন?
  • আপনাদের সাথে কেন যাবো?

এই প্রশ্নের উত্তরে হয়তো আপনার ভ্রমণ সহজ হয়ে উঠতে পারে। তবে বিশ্বাস করার চেয়ে প্রমাণ নিয়ে নেন। এক্ষেত্রে আমাদের ওয়েব পেইজ কিংবা ফেইসবুক পৃষ্ঠা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এডিট করা ছবি না দেখে, আমাদের মৌলিক ছবির সাহায্য নেন। কিংবা আমাদের সাথে যোগাযোদ করুন ছবির জন্য।

Leave a Reply

Proceed Booking