01717-758014 01817-722572

বিছনাকান্দি : পাথরের বিছানায়

“বিছনাকান্দি” শব্দের অর্থ পাথরের আঁটি বা গুচ্ছবদ্ধ পাথর। মূলত একটি পাথর কোয়েরি যেখানে নদী থেকে পাথর সংগ্রহ করা হয়। খাসিয়া পর্বত থেকে নেমে আসা ঝরনার জলধারা এখানে একটি হ্রদের সৃষ্টি করেছে যা পিয়াইন নদীর সাথে গিয়ে সংযুক্ত হয়েছে। এখানকার শিলা-পাথর গুলো একদম প্রাকৃতিক এবং এগুলো পাহাড়ি ঢলের সাথে পানির মাধ্যমে নেমে আসে।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত বিছনাকান্দির মূল আকর্ষণ হচ্ছে ভারতের উঁচু পাহাড়ের ঝর্ণা থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ শীতল জলধারা, পাথরপূর্ণ নদী এবং দূরের আকাশচুম্বী পাহাড়ের সৌন্দর্য। পানির গভীরতা বেশি নয় বলে স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে উঁচু-নিচু পাথরগুলোকে দেখা যায়। নদীটির দুই পাশেও রয়েছে পাথরের সারি। সামনের দিকে দেখলে ঝর্ণা এবং উঁচু পাহাড়ের আঁকাবাঁকা সারিগুলো আপনার মন ভাল লাগায় পূর্ণ করবে। দূর থেকে দেখেই আপনাকে আর স্বাদ উপভোগ করতে হবে কেননা সবগুলো পাহাড় এবং ঝর্ণার অবস্থানই ভারতে (India)।

পাহাড়, নদী আর ঝর্ণার একাকার হয়ে মিলেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটের বিছনাকান্দি (Bichanakandi)। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে খাসিয়া পাহাড়ের খাঁজে রয়েছে সুউচ্চ ঝর্ণা। পুঞ্জিভূত মেঘে ঢাকা ভারতের মেঘালয় (Meghalaya) পর্বতমালা আর সে পাহাড় থেকে প্রবাহিত ঝর্নাধারার শীতল তীব্র প্রবাহ পিয়াইন নদী (Piyain River) হয়ে বাংলাদেশে এসে মিলিত হয় বিছানাকান্দি অংশে।

পিয়াইন নদীতে চলতে চলতে দেখা যাবে আকাশের সাথে মিতালী করা উঁচু উঁচু পাহাড়ের সারি। চোখ ধাঁধানো সব দৃশ্য দেখতে দেখতে একসময় এই পাহাড়ের কোলে এসে চোখে পড়বে বিস্তীর্ণ পাথর কেয়ারি। বর্ষায় পাথর কেয়ারি পানিতে ডুবু ডুবু। এখান থেকে একটু সামনেই সীমান্ত ঘেঁষা পাথর-জলের বিছনাকান্দি।

বিছনাকান্দির সবচেয়ে বড় সৌর্ন্দয ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন রঙের পাথর। পাহাড়ের সাথে মিতালী করে থাকা সাদা মেঘ, নীল আকাশ আর দূর পাহাড়ের ঝর্ণা বিছনাকান্দির মূল সৌর্ন্দয। ভারতের সীমান্ত রয়েছে একটি ঝুলন্ত সেতু রয়েছে, বর্ষাতে মেঘে ঢাকা এই সেতুকে মনে হবে হয়তো স্বর্গের দরজা।

পাথরে ভরা পুরো বিছানাকান্দি। পানিতে বিছানো রয়েছে ছোট-বড় হাজার কোটি পাথর বিভিন্ন রং ও বর্নের। সে সব পাথরের কোনোটাতে মোটা ঘাসের আস্তরণ আবার কোনোটা ধবধবে সাদা। এ সব পাথর মেঘালয় পর্বতমালার ওপার থেকে প্রবাহিত ঝর্নার ধারায় বয়ে চলে এসেছে পিয়াইন নদীর বিছনাকান্দি অংশে। যত দেখবেন ততই মুগ্ধ হবেন, মনের অজান্তে ঝাঁপিয়ে পড়বেন পাথর ভরা পিয়াইন নদীর সু-শীতল সেই জলে। পাথর জলের বিছানায় শুয়ে আপনার মনে হবে, আহা কী শান্তি!

সিলেট (Sylhet) শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী উপজেলার গোয়াইনঘাটের রুস্তমপুর ইউনিয়নে বিছানাকান্দি। পিয়াইন নদী পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয় বর্ষাতে। এই সময় পাহাড় থেকে অনবরত স্বচ্ছ পানির ধারা বহমান। তাই পানির প্রবাহ বেড়ে যায় কয়েক গুণ ফলে মূল ধারায় স্রোত থাকে অনেক শক্তিশালী। বর্ষায় ভরা পিয়াইন নদীতে চলতে চলতে এর দুই পাশের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হবেন এবং আর মনে হবে এর চারপাশটাই যেন ছবির মতো।

আর শীতে পানি শুকিয়ে একেবারে পাথরের তলায়। তখন পিয়াইন নদী হেঁটেই পার হওয়া যায়।

 

কী ভাবে যাবেন?

বিছনাকান্দির এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে অক্টোবর পর্যন্ত বিছনাকান্দি যাবার সঠিক সময়।

প্রথম আপনাকে সিলেট শহরে যেতে হবে। সেখান থেকে বিছনাকান্দি যাবার কয়েকটা পথ রয়েছে।

আপনি চাইলে নদী পথে যেতে পারেন।

নদী পথে গেলে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে পাংথুমাই। তারপর ট্রলারে করে বিছনাকান্দি। পানথুমাই (Pantumai) হয়ে বিছনাকান্দি গেলে বাড়তি পাওনা এখানকার বিশাল ঝর্না (Waterfalls) আর পিয়াইন নদীর অপরূপ সৌন্দর্য্য। পাংথুমাই যেতে সময় লাগে দেড়ঘন্টা। সেখান থেকে বিছনাকান্দি আরও দেড় থেকে দুই ঘণ্টার পথ।

সড়কপথ হলে সিলেট শহর হতে ৬০ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে বিছানাকান্দি গ্রাম। সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক ধরে সালুটিকর বাজারের ডান দিকে গাড়ী নিয়ে গোয়াইনঘাট লিঙ্ক রোডে হয়ে দেড় ঘন্টা গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন বিছনাকান্দি।

 

জেনে রাখা ভাল

  • বর্ষার দিনে (Rainy Season) বিছনাকান্দি পূর্ণ যৌবন লাভ করে। যাতায়াত হয় অনেক সহজ।
  • বিছনাকান্দির এমন সৌন্দর্য বর্ষা চলে গেলে বা পানি কমে গেলে আর থাকেনা।
  • ঢাকা থেকে রাতের বাসে যাত্রা করে সারাদিন ঘুরে আবার পরের রাতে ফিরতে পারেন।
  • বিছনাকান্দিতে দিনে গিয়ে দিনে ফেরা যায় সিলেট শহর থেকে।
  • সারাদিন বেড়ানো শেষে রাতে এসে থাকতে হবে সিলেটে।
  • বিছনাকান্দি-লক্ষনছড়া–পানথুমাই’ এই তিনটি জায়গা মোটামোটি ভাবে ঘুরে হাদারপাড় ফিরে আসতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘন্টা।
  • সিলেট থেকে আসার পথে গোয়াইনঘাট বাজারেই দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে অথবা প্যাক করে নিতে পারেন।
  • হাদারবাজার থেকে বিছনাকান্দির দুরত্ব খুব একটা বেশি না। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যেতে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট লাগে।
  • শুকনা মৌসুমে বিছানাকান্দি হেঁটে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু এই বর্ষায় হাদারবাজার থেকে হেঁটে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। কেননা, পথে পড়ে বেশ কয়েকটি পাহাড়ি নদী।
  • সিলেট শহরে উন্নতমানের হোটেল রয়েছে । তাই সিলেট শহরেই থাকতে পারেন।
  • ইচ্ছা থাকলেই একদিনেই রাতারগুল (Ratargul) দেখে বিছনাকান্দি ভ্রমণ করতে পারেবেন।
  • নৌকা ও সিএনজি ভাড়া করতে ভালো মত দামাদামি করুন।
  • বিছনাকান্দিতে পানিতে নামার সময় সতর্ক থাকুন।
  • বর্ষাকালে পানির স্রোতের গতিও অনেক বেশি থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
  • পাথর উত্তোলনের ফলে নিচে গভীর খাঁদ আছে, তাই অভিজ্ঞ কাউকে সাথে রাখুন।
  • বিছানাকান্দি একটি পাথর কোয়ারী, চারাপাশে পাথর, পানির নিচেও পাথর, তাই হাঁটায় সাবধান থাকুন।
  • স্থানীয়দের সাথে বিনয়ী থাকুন।
  • সন্ধ্যার আগেই সিলেট শহরে ফিরে আসুন।

 

প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের মাঝে কিছুটা সময় কাটাতে পারলে আপনার কেমন লাগবে একটু ভেবে দেখুন তো। একটু সময় করে আপনিও বিছনাকান্দির এই সৌন্দর্য দেখে আপনার চোখ জুড়িয়ে আসতে পারেন, পাশাপাশি শীতল পানির স্রোতের গা ভিজিয়ে মনে জাগিয়ে তুলতে পারেন অন্যরকম ভালোলাগা।

যদি কোন সহায়তার প্রয়োজন পরে কিংবা আর কিছু জানার ইচ্ছা থাকলে সাহায্য নিতে পারেন সফরসঙ্গীর (01841497987/01707500505.)

Leave a Reply

Find Your Desired Tour

Related Travel Blog Post

নেপাল ভ্রমণ: বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা নির্দেশিকা
11/12/20250
স্ট্রেস ফ্রি জীবন: বছরে কত ভ্রমণ করলে মন ভালো থাকে
06/12/20250
, ,
সাজেক ও রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – দেশি খাবারের স্বাদ, পাহাড়ি হাওয়ার ছোঁয়া আর স্মৃতিময় মুহূর্ত
29/10/20250
cox's bazar
কক্সবাজার: সাগরের ছন্দময় কথোপকথন
11/12/20240
Mizoram View Resort Sajek
সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ গাইড
11/12/20240
, ,
রহস্যময় প্রাকৃতিক গুহা আলুটিলা
27/06/20230

Why Book With Us?

  • No-hassle best price guarantee
  • Customer care available 24/7
  • Hand-picked Tours & Activities
  • Free Breakfast

Get a Question?

Do not hesitage to give us a call. We are an expert team and we are happy to talk to you.

01817722572

01717-758014

query@sofhor.com

Tour Packages

Nafakhum – Amiakhum

floating market tour packages

Visit Floating Market

nijhum dwip tour

Nijhum Dwip

kuakata tour

Kuakata

saint martin tour

Saint Martin

Proceed Booking