কুয়াকাটা : সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি

সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য, লাল কাঁকড়ার সাথে অবিরাম ছোটাছুটি, বালুকা বেলায় প্রিয়জনের সাথে হাঁটাহাঁটি, দিগন্ত জোড়া আকাশ আর সমুদ্রের নীল জলের তরঙ্গায়িত ঢেউ ও উড়ে যাওয়া সাদা গাংচিলের দল, মাছ শিকারের জন্য যাওয়া লড়াকু জেলেদের চলাচল, সৈকতের এক পাশে বিশাল সমুদ্র আর অন্য পাশে আছে নারিকেল গাছের সারি, পরিচ্ছন্ন বেলাভূমি, অনিন্দ্য সুন্দর সৈকত এবং ম্যানগ্রুভ বন কুয়াকাটাকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা।

বি:দ্র: আমাদের কুয়াকাটা ট্যুর প্যাকেজ গুলো দেখতে ভিসিট করুন : https://sofhor.com/tour-destination/kuakata/

পৃথিবীর দুটি মাত্র অঞ্চলে একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখা যায়। বাংলাদেশের সেই স্থানটি হলো কুয়াকাটা (Kuakata)। যা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সৈকত (Sea beach) যেখান থেকে সূর্যোদয় (Sunrise) ও সূর্যাস্ত (Sunset) দুটোই দেখা যায়।

বিশাল সমুদ্রের নীল জলরাশি দোলনার মতো যখন দুলে দুলে তীরে আসতে থাকে তখন পূর্ব আকাশে সূর্যের হালকা রক্তিম বৃত্তের আলোতে আলোকিত হয়ে পাল্টে যায় কুয়াকাটার সমুদ্রের নীলাভ জল। লাল বর্ণের সূর্যটা অল্প সময়ের মধ্যেই পূর্ণ বৃত্তে রূপ নেয়।

সদ্য জাগা রক্তিম সূর্য, নিচে সমুদ্রের নীল জল, দীর্ঘ বেলাভূমি আর সমদ্রতটের পাশের ঘন সবুজ ঝাউবনের সমন্বয়ে কুয়াকাটা (Kuakata) সৈকত হয়ে উঠে শিল্পীর আঁকা কোন ছবি।

গোধূলিতে পাখির কিচির-মিচির শব্দ আর জেলেদের (Fishermen) বাড়ী ফেরার সাথে মিল রেখে সাগরের ঢেউয়ের মধ্যে আস্তে আস্তে হারিয়ে যায় লাল থালার মত সূর্যটা।মনে হয় সাগরের মধ্যেই সূর্যের বাড়ি ঘর।

পূর্ণিমার রাতে (Full Moon) সৌন্দর্য ভাবনায় আঁকা ছবিকে হার মানায়। চাঁদের আলোয় বিশাল বিশাল ঢেউগুলো যেন আপনার জন্য ছুটে আসে। আর অমাবস্যায় রাতে ফসফরাসের মিশ্রণে সাগরের ঢেউগুলো থেকে আলোর বিচ্ছুরণ ছড়ানোর দৃশ্যর কোন তুলনাই হয় না। নীরব, নিথর ও নিস্তব্ধ হয়ে শুধু এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে সময় বয়ে যাবে।

কুয়াকাটা স্থানীয়রা যাকে ডাকে সাগর কন্যা বলে যা বাংলাদেশের (Bangladesh) সর্ব দক্ষিণে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নে কুয়াকাটা অবস্থিত। একেবারে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর (bay of Bengal) কূলের নিরিবিলি একটি স্থান। পূর্বে গজমতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল, পশ্চিমে কুয়াকাটার বনভূমি, উত্তরে কলাপাড়া জনপদ ও দক্ষিণে বিশাল বঙ্গোপসাগর। যেখানে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত যার যেকোন স্থানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

কূপ কিংবা কুয়া থেকে কুয়াকাটা

ইতিহাসে যতটুকু জানা যায়, বর্মিরাজা ১৭৮৪ সালে রাখাইনদের মাতৃভূমি আরাকান দখল করার ফলে হাজার হাজার রাখাইন তাদের মাতৃভূমি আরাকান ত্যাগ করে। বড় বড় নৌকায়  করে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। ভাসতে ভাসতে তারা বঙ্গোপসাগরের তীরের রাঙাবালি দ্বীপে এসে অবতরণ করে। গড়ে তোলে নতুন বসতি। তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এইচ বিভারেজের অনুসন্ধানী জরিপ মতে অঞ্জু মং-এর নেতৃত্বে এ এলাকায় প্রথম আদিবাসী হিসেবে রাখাইন সম্প্রদায়ের আগমন ঘটে। পরে থুঙ্গারী ও হাঙ্গারী মং দু ভাইয়ের নেতৃত্বে বন জঙ্গল কেটে রাখাইন সম্প্রদায় আবাসভূমি গড়তে শুরু করে, মিষ্টি পানির অভাব মেটাতে রাখাইনরা বালুমাটি খুঁড়ে ছোট ছোট কূপ খনন করে পানি সংগ্রহ করত। ‘কুয়া’ শব্দটি এসেছে ‘কূপ’ থেকে। কুয়া খনন করে এখানে সুপেয় পানি পাওয়ায় তারা এর নাম দিয়েছিল কুয়াকাটা।

কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থান

ফাতরার বন

সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম দিকে অবস্থিত নদীর অন্য পাড় থেকে ফাতরার বন শুরু। সুন্দরবনের (Sundarbans) প্রায় সকল বৈশিষ্ট রয়েছে এই বনের। তাই একে দ্বিতীয় সুন্দরবন বলা হয়।  এই বনে রয়েছে বন মোরগ, বানর, বুনো শুকর ও নানান পাখি বাস।  কুয়াকাটা থেকে ফাতরার বনে যেতে হলে ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া করতে হবে।

গঙ্গামতির জঙ্গল

পূর্ব দিকে গঙ্গামতির খাল পর্যন্ত এসে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত শেষ হয়েছে। আর এই জায়গা থেকেই গঙ্গামতির জঙ্গল শুরু। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ,বিভিন্ন রকম পাখি, বন মোরগ-মুরগি, বানর ইত্যাদি পশুপাখির আবাস এই জঙ্গলে। গজমতির জঙ্গল হিসাবে অনেকে কাছে পরিচিত।

কেরানিপাড়া

সীমা বৌদ্ধ মন্দিরের রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে গেলেই রাখাইনদের আবাসস্থল কেরানিপাড়া। কাপড় বুণনে বেশ দক্ষ রাখাইন নারীরা আর তাদের তৈরি শীতের চাদর অনেক আকর্ষণী, যা এখান থেকে কিনতে পারবেন।

কুয়াকাটার ‘কুয়া’

নামকরণের পেছনে যে ইতিহাস আছে সেই ইতিহাসের সাক্ষী কুয়াটি এখনও রয়েছে রাখাইনদের বাসস্থল কেরাণিপাড়ায়। এপাড়ায় প্রবেশ করতেই প্রাচীন এ কুয়া দেখতে পাবেন। কথিত ১৭৮৪ সালে মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে রাখাইনরা বঙ্গোপসাগরের তীরে রাঙ্গাবালি দ্বীপে এসে আশ্রয় নেয়। সাগরের লোনা জল ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় তারা এখানে মিষ্টি পানির জন্য কূপ খনন করে সেখান থেকে জায়গাটি ধীরে ধীরে কুয়াকাটা নামে পরিচিত হয়ে উঠে।

সীমা বৌদ্ধ মন্দির

প্রাচীন কুয়ার একটু সামনেই সীমা বৌদ্ধ মন্দিরের অবস্থান। এই মন্দিরের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩৭ মন ওজনের অষ্টধাতুর তৈরি একটি প্রাচীন ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তি।

আলীপুর বন্দর

কুয়াকাটা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় মৎস্য ব্যবসা কেন্দ্র আলীপুর

মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে রাখাইন আদিবাসীদের আবাসস্থল মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে একটি বৌদ্ধ মন্দির, যাতে রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি

শুঁটকি পল্লী

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম প্রান্তে জেলে পল্লীর অবস্থান। মূলত নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুঁটকি তৈরির মৌসুম চলে। সমুদ্র থেকে মাছ ধরে সৈকতের পাশেই রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। ইচ্ছা থাকলে জেলেদের এই কর্মব্যস্ততা দেখে সময় কাটাতে পারেন আর কম দামে কিনে নিতে পারেন বিভিন্ন ধরণের পছন্দের শুঁটকি (Dry Fish)।

ক্রাব আইল্যান্ড (crab island)

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ধরে পূর্ব দিকে অনেকটা দূর পর্যন্ত এগিয়ে গেলে ক্রাব আইল্যান্ড বা কাঁকড়ার দ্বীপ চোখে পড়ে। নির্জন সৈকতে ঘুরে বেড়ায় হাজার হাজার লাল কাঁকড়ার দল। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কুয়াকাট সমুদ্র সৈকত থেকে ক্রাব আইল্যান্ডে যাবার স্পিড বোটে পাওয়া যায়।

 

কীভাবে যাবেন

লঞ্চে ঢাকা (Dhaka) সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী বা বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা। আর বাসে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে বরিশাল (Barishal) হয়ে কুয়াকাটা। তবে সবচেয়ে সহজ ও আরামের কথা বিবেচনা করলে কুয়াকাটা যেতে নদী পথই উত্তম।

ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে লঞ্চে করে পটুয়াখালীতে গিয়ে সেখান থেকে বাসে করে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। অথবা লঞ্চে সদরঘাট থেকে বরিশাল গিয়ে সেখান থেকে বাসে কুয়াকাটা যেতে পারবেন।

ঢাকা থেকে লঞ্চে পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা

সদরঘাট থেকে বিকেলের পর লঞ্চ পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লঞ্চ গুলো পটুয়াখালীর বিভিন্ন টার্মিনালে যায়। আমতলী ঘাট বা পটুয়াখালী লঞ্চ ঘাট যায় এমন লঞ্চে গেলে সুবিধা। পটুয়াখালী লঞ্চ ঘাট থেকে অটোতে বাস স্ট্যান্ড গিয়ে বাসে যেতে হবে কুয়াকাটা। সময় লাগবে প্রায় দুই ঘন্টার মতো।

ঢাকা থেকে লঞ্চে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা

সদরঘাট থেকে সন্ধ্যার পর বরিশালের উদ্দেশ্যে একাধিক লঞ্চ ছেড়ে গিয়ে সকালে বরিশাল পৌঁছায়। বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে রূপাতলি বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে কুয়াকাটা যাবার যে কোন বাসে উঠে যেতে হবে। সময় লাগবে প্রায় তিন ঘন্টার মত।

বাসে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা

ঢাকার গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে সাকুরা পরিবহন, দ্রুতি পরিবহন, সুরভী পরিবহনের বাস করে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। এছাড়াও প্রতিদিন সকাল ও রাতে কমলাপুর বিআরটিসি বাস ডিপো থেকে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়।

 

জেনে রাখা ভাল

  • ঢাকা থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার ও বরিশাল থেকে ১০৮ কিলোমিটার।
  • রাজধানী ঢাকা থেকে বিমানে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা যাওয়া যায়।
  • বিলাসবহুল লঞ্চ বা স্টিমারযোগেও কুয়াকাটা যাওয়া যায়। আবার বাসযোগে সরাসরি কুয়াকাটা যাওয়া যায়।
  • সৈকতের পূর্ব প্রান্তে গঙ্গামতির বাঁক থেকে সূর্যোদয় সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যায়।
  • সূর্যাস্ত দেখার উত্তম জায়গা হল কুয়াকাটার পশ্চিম সৈকত।
  • ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর লাস্ট লঞ্চ ছাড়ে ৭ টায়। তাই টাইম ঠিক রাখতে হবে। আর লঞ্চের ডেকে গেলে দুই ঘন্টা আগে যেতে হবে ভালো জায়গা পাবার জন্য। আর কেবিনে গেলে আগে থেকে বুকিং দিতে হবে, নাহলে পাওয়া কষ্টকর।
  • লঞ্চের ডেকে গেলে বিছানার চাদর ও ভেজানো যায় এমন জুতা নিয়ে নিবেন।
  • বরিশাল,পটুয়াখালী,কুয়াকাটা এসব জায়গা ঘুরার জন্য লঞ্চ সেরা উপায়। কারণ বাংলাদেশের নদীপথের সবচেয়ে বড় যাত্রা এই পথ। পূর্ণিমার একটা রাত লঞ্চে কাটানোর স্মৃতি হয়ে থাকবে সারাজীবন।
  • লঞ্চে প্রতি খাবারের দাম একটু বেশি। তাই লঞ্চে উঠার আগে খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারেন।
  • হোটেল, বাইক,মাছের আড়ত কিংবা শুটকি ও অন্যান্য সকল বিষয়েগুলোতে অনেক দরদাম করতে হবে।
  • বাইকে দুইজন করে নেয়। তাই জোড়ায় যাওয়া ভালো।
  • কুয়াকাটার বৌদ্ধ মন্দির, ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী নৌকা,আর কুয়াটির কুয়া বীচের একদম পাশেই হেটে গেলে দশ মিনিটের মতো।
  • রাতেই বাইক ঠিক করে রাখতে হবে। অনেক জায়গায় ভ্যানে যাওয়া যায় না আর ভ্যানে চার্জ এতোক্ষন থাকবে না তাই ভ্যান ঠিক না করাই ভালো। পরদিন ভোরে বাইকারাই হোটেলের সামনে গিয়ে কল দিবে।
  • সূর্যোদয় দেখতে হলে রাত থাকতেই রওনা দেয়াই ভালো কারণ গঙ্গামতীর লেক পার হতে অনেক ভীড় হয়।
  • সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত পুরোপুরি দেখতে হলে শরৎকালে যাওয়া ভালো। শীতকালে কুয়াশার কারণে ভাল দেখা যায় না।
  • যাওয়ার আগে অবশ্যই আবহাওয়া এবং মাছের অবরোধের সময় জেনে যাবেন। এ সময় মাছ এবং শুঁটকির দাম অনেক বেশী থাকে।
  • ডিএসএলআর, বাইক এবং হোটেলের লোকজনদের প্রশ্ন এড়াতে কৌশলী ও সাবধানী হবেন।

আর যে কোন সাহায্য ও সহযোগীতার জন্য কথা বলতে পারেন সফরসঙ্গীর (01707500505 অথবা 01841497987) সাথে।

Leave a Reply

Find Your Desired Tour

Related Travel Blog Post

, ,
রহস্যময় প্রাকৃতিক গুহা আলুটিলা
27/06/20230
জব্বারের বলী খেলা
25/06/20230
Koh Samui Travel Guide Sofhor Tourism,
Koh Samui Travel Guide | Things To Do | Explore Thailand
13/02/20230
Bangkok Travel Guide Sofhor Tourism,
Bangkok Travel Guide | Things To Do | Explore Thailand
12/02/20230
Phuket Travel Guide,
Phuket Travel Guide | Things To Do | Explore Thailand
12/02/20230
Thailand Travel Guide,
Thailand Travel Guide | Things To Do | Explore Thailand
09/02/20230

Why Book With Us?

  • No-hassle best price guarantee
  • Customer care available 24/7
  • Hand-picked Tours & Activities
  • Free Breakfast

Get a Question?

Do not hesitage to give us a call. We are an expert team and we are happy to talk to you.

01817722572

01707500505

sofhortourism@gmail.com

Tour Packages

Nafakhum – Amiakhum

floating market tour packages

Visit Floating Market

nijhum dwip tour

Nijhum Dwip

kuakata tour

Kuakata

saint martin tour

Saint Martin

Proceed Booking